(পর্ব – ৫)

রাখাল বাবুর এই হয়েছে এক দোষ। রাধানগর বিচে অমন সুন্দর সূর্যাস্ত দেখার পরও মুখ গোমরা করে বসে আছেন। কিছুতেই তিনি নতুনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেন না। নতুন রীতিনীতি, নতুন সংস্কৃতি, নতুন পোষাক আশাক। তাই হ্যাভলক থেকে ফেরার সময়তেও ডিজের গুম গুম আওয়াজ তার হার্টবিট বাড়িয়ে দিয়েছিল।


রাধাকৃষ্ণ রিসর্টের অমন সুন্দর ঘরে সন্ধ্যে বেলা টিভি খুলে কলকাতার পুজো পরিক্রমা দেখতে লাগলেন। পরের দিন নীল আইল্যান্ডে এসে কিছুটা ধাতস্থ হলেন আবার। এখানে তিনটি বিচ। প্রথমে গেলেন লক্ষনপুর। গাইড ছাড়া সম্ভব নয় এখানে। ভাটার টানে সমুদ্র কিছুটা পেছিয়ে এখন।

মৃত কোরাল পেরিয়ে জীবন্ত কোরালের কাছে চলে এলেন। স্বচ্ছ জল। দেখলেন ব্রেন কোরাল, জীবন্ত পঞ্চমুখী শঙ্খ, নীল নিয়ন মাছ, কোরালের গায়ে আটকে থাকা লজ্জাবতী লতার মত উদ্ভিদ টাচ মি নট, স্টার ফিশ ইত্যাদি। বুঝলেন জীবনে তার দেখার কিছু বাকি ছিল। এছাড়াও দেখলেন প্রাকৃতিক ব্রিজ। তারপর ডাঙায় এসে বাঙালী গৃহবধুর হাত থেকে আমপোড়া শরবৎ খেয়ে জান ঠান্ডা হোলো তার।

কথায় কথায় জানতে পারলেন তিনি দিগলীপুরের মেয়ে বিয়ে হয়েছে নীলে। তার পুর্বপুরুষ এসেছিলেন বাংলাদেশ থেকে এখানে। আসলে পাঠানো হয়েছিল। কি ভেবে গৃহবধুটি বললেন আবার আসবেন।

রাখাল বাবু একটু অন্যমনস্ক হয়ে গেলেন, এই আথিথেয়তা পেয়ে। তারপর ভরত পুর বিচ। এখানে গ্লাসবটম বোটের ছড়াছড়ি। ঐ সব বোটে না চেপে তিনি বসলেন বিচের ধারে। একদৃষ্টে চেয়ে রইলেন সমুদ্র পানে। তার কাছে দিগলীপুর, নীল দ্বীপ, ভরতপুর, আন্দামান, কলকাতা, সারা বিশ্ব একাকার হয়ে যেতে লাগলো।

(পর্ব – ৪)

[পরম্পরা ওয়েবজিন, জুন ২৪, সূচিপত্র]

0 0 ভোট
Article Rating
3 Comments
Oldest
Newest Most Voted
পংক্তির ভেতর মন্তব্য
সব মন্তব্য
Dr Dipak Banerjee
Dr Dipak Banerjee
4 months ago

আম্পোড়া শরবতের মত ভালো লাগলো লেখাটা!
আরো পাবার ইচ্ছে রইলো!

Syamali Bhadra
Syamali Bhadra
4 months ago

খুব ভাল লাগছে

পার্থ সারথি বণিক
পার্থ সারথি বণিক
3 months ago

ভাল লাগল।