সীমান্তনদী
সুকুর মোল্লার মেয়ে সুর্মা খাতুন প্রকাশ দত্তর সঙ্গে পালিয়ে যাবার পরে গ্রামে লাঠালাঠি হয়েছিলো বিস্তর। ঝিনাইদহে ভাড়াবাড়িতে এই পনেরো বছরে কাকপক্ষীতেও সে ইতিহাস জানতে পারেনি। প্রকাশ দত্ত সুরমার সংসারে তেমন অভাব অশান্তি নেই।
মিয়ারদালানের পাশ দিয়ে যাবার সময় সুরমার কানে আসে জটলার আলোচনা। সরকার বদল হবে। দেশ জুড়ে সাজো সাজো রব।
টিভিতে খবর দেখায়, সরকার নেই। হাসিনা নাকি ভারতে পালিয়েছেন। প্রকাশ এসেছে ভেবে দরজা খুলে এই খবরটা আর দেওয়া হয়না। বাড়ি লুটপাট করে সুরমাকে মেরে নবগঙ্গায় ভাসিয়ে দেয় একদল সোনার বাংলার সোনার বেটাছেলে।
সুর্মার বাবা বৃদ্ধ সুকুর ভারতের নদীতে মাছ ধরে। বনগাঁর এদিকটাতে।
নদী বড় বিচিত্র। নবগঙ্গা হয়ে সুর্মার টাটকা লাশ তরতরিয়ে দোলে।এপার বাংলা ওপার বাংলায়। জোয়ারে আর ভাটায়।
সুকুরের জালে ভারী ঠেকে। মাছ? জাল টেনে হতাশ হয় বৃদ্ধ। মেয়েটার হাঁটুছোঁয়া ঢেউখেলানো চুল আর কপালের মাঝখানে তিলটা দেখে মায়া হয়। কিন্তু না। সীমান্তে এমনিতেই ধরপাকড়। লাশের কথা জানাতে গেলে হ্যাপা। সময় নষ্ট। মেয়েমানুষের লাশ যেমন খেলছে জলে, খেলুক।
সুর্মার লাশ ভেসে যায়। একঝাঁক মাছ। সুকুরের জালে টান লাগে। বুকেও কি!
[পরম্পরা ওয়েবজিন, জানুয়ারি ২৫, সূচিপত্র – এখানে ক্লিক করুন]
বেশ ভাল লাগলো !
অনেক ধন্যবাদ।
দুই পাড় মিলেমিশে গল্পের বিস্তার সাম্প্রতিক ঘটনার আবহে নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ।যদিও শেষে একটু চমক আশা করেছিলাম।
বেশ। গল্পটা নিয়ে আরেকবার ভাববো। আসলে দেড়শো শব্দ মাত্র। কৃপণের মতো খরচ করেছি।
অস্থির করে দেয়।
সময়টা বড্ড গোলমেলে। বাঁচার পরিসর ক্রমেই সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
অসহায় পিতা.……. লাল চোখের সমাজ… ভালবাসার ধর্ম.….. অণুর বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন। খুব ভালো লেখা।
সেইতো। আর বুকের ওপর কাঁটাতার কেবলই চেপে বসছে।
সত্যি কোনো কথা হবে না।
ভারত – বাংলাদেশের বাস্তব প্রতিচ্ছবি সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।
স্যালুট জানাই অনু গল্পকার আর চট্টোপাধ্যায়কে।
চলুক কলম।
অনেক ধন্যবাদ।খুব ভালো থাকবেন।
অসাধারণ মন ছুঁয়ে যাওয়া একটি গল্প।
ভালোবাসা নিয়ো।
তোমার মুখে শোনা। তবে পড়ে বেশি ভালো লাগলো।
প্রাণিত হলুম।
অণুগল্পের ছোট্ট পরিসরে দুই রাষ্ট্রের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের আবহে এ এক অনবদ্য মানবিক দলিল। তোমাকে অভিবাদন।