অলিগলি সেদিন হাঁটতে, হাঁটতে পেরিয়েছিলাম রতনবাবুরঘাট,কাশীপুর মহাশ্মশান। যেখানে কিনা রামকৃষ্ণ এর সমাধি আছে। এর আগেই সতীঘাটে যে বাড়ির বধূর শেষ সতীদাহ হয়েছিল,সেই বাড়িটি চেনা হল।এরপর একে একে দশমহাবিদ্যার মন্দির, রাসবাড়ি, আনন্দময়ী কালী মন্দির এর গল্প শুনতে শুনতে নেতাজির স্মৃতিবিজরিত বাড়ি তে গিয়ে এত সব ইতিহাস হজম করছি।এই প্রাচীন জনবহুল জনপদ এর পরতে পরতে গল্প।আর আমি গল্প গোগ্রাসে শুনি।
বিদেশ ভ্রমণের,বা বরফের ছবি,পাহাড়ের ছবি ছাড়াও এটাও ত এক ভ্রমণ, ইতিহাসের পাতা পড়তে পড়তে। কি বলেন?

সিংহতোরণ রতনবাবুর ঘাটের কাছে।

এই মন্দিরটি রতন বাবু ঘাট রোডে নড়াইল রাজবাড়ির ভেতরে আনন্দময়ী কালি মন্দির। কালীমন্দিরটি খিলানযুক্ত দালান রীতির। সামনের অংশে প্রশস্ত সিঁড়ি। মন্দিরের ভেতর পঞ্চমুণ্ডির আসনের ওপর দেবীমূর্তি প্রতিষ্ঠিত। রামরতন রায় ছিলেন এই বাড়ির পূর্বপুরুষ, যাঁর নামে বর্তমানে রতনবাবু রোড।

দশমহাবিদ্যা মন্দির। এই মন্দিরে রামকৃষ্ণ তন্ত্র সাধনার পাঠ নিতেন। এক অদ্ভুত রীতি নাকি এই মন্দিরের, আগে এখানে ভোগ নিবেদন হয়, তারপর দক্ষিণেশ্বর এর ভবতারিণী ভোগ পান।

Hungry আন্দোলন এর এক অন্যতম মুখ তুষার রায়ের বাড়ি। Hungry আন্দোলন সম্পর্কে বলতে গেলে অনেক কিছু, যারা জানেন না গুগল দেবতার আশ্রয় নেবেন প্লিজ।

এই বাড়িতে নেতাজি আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁরই স্মৃতি বিজরিত। বাড়ির আদল, নকশা, ভেতরের কারুকার্য উড়িষ্যার স্থাপত্য শিল্পের ছাপ স্পষ্ট। সম্ভবত মালিক উড়িষ্যার ছিল।
আজাদ হিন্দের কলকাতার একটি গোপন কার্যালয় ছিল এটি।কথিত আছে, এলগিন রোডের বাড়ি থেকে বেরিয়ে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার আগে নেতাজি তার এই আত্মীয়ের বাড়িতে কিছুসময় ছিলেন।

রাজা রামমোহন রায়, যার অবদান ছাড়া বোধহয় নারীমুক্তি, নারীশিক্ষা এগোতই না।

এই সেই সতীঘাট, যেখানে সর্বশেষ সতীদাহ হয়েছিল। তারপর আইন করে বন্ধ করা হয়। রাজা রামমোহন এর সেই প্রতিবাদ এখনও যেন ওখানে বাতাসে বয়ে যায়।

সতীঘাট এর ওপারেই বেলুড় মঠ। সহজেই লঞ্চ পেরিয়ে যাওয়া যায়।

[পরম্পরা ওয়েবজিন, অক্টোবর ২৪, সূচিপত্র – এখানে ক্লিক করুন]

0 0 ভোট
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
পংক্তির ভেতর মন্তব্য
সব মন্তব্য