মফস্বল শহরের গা ঘেঁষে বয়ে চলেছে ছোট নদী, গয়না। তার চারপাশে গজিয়ে ওঠা ঘরগুলোতে আলগোছে সে জলের দাগ রেখে যায়। এ বাড়ির আঙিনায়, ও বাড়ির ছায়ায়, সে বাড়ির রান্নাঘরে, অন্য বাড়ির গোয়ালের ধার ঘেঁষে। এমনি আম কাঁঠাল সুপুরি ঘেরা উঠোনের পাশে, এক পুরোনো ভগ্নদশা বড় বাড়ির দুটি অংশ। সন্ধের অন্ধকারে ভূতের আস্তানা মনে হয়। অপ্রতুল আলোতে একদিকে দোতলার একটা জানালা খোলা। সেখানে জানালার পাশে বসে একা একা মদ খাচ্ছে বিপুল। পরমা চলে যাওয়ার পর আপিস থেকে ফিরে, ওর এখন এটাই কাজ।

পাড়ার লোক চমকে গেল, যখন মাস তিনেক আগে বিপুল আর ওর মাকে পুলিশ এসে তুলে নিয়ে যায়। পরমা বাপের বাড়ি গিয়ে বিপুলের নামে ফোর নাইন্টি এইট-এ ধারায় অভিযোগ করেছে এবং সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়েছে। এক ধাক্কায় টান করে থাকা সংসার ছত্রখান।

জামিনে ছাড়া পেয়ে বিপুল আবার আপিসে যোগ দেয়, চেষ্টা করে ছিঁড়ে যাওয়া জীবনটাকে রিফু করে নিতে। কিন্তু সব কি আর আগের মতো হতে চায়? বিপুলের বৃদ্ধা মা, সেই যে ঠোঁটের কুলুপ এঁটেছে, আর খোলার যো নেই। বিপুলের ফাঁক হয়ে থাকা জীবনের ভেতর নেশা জায়গা করে নেয়। গয়নার স্রোত খুব বেশি নেই। সেখানেই ভেসে চলে কচুরিপানা, ছোট ছোট মাছধরা ডিঙি আর সময়। সেই সময়ের পিঠে চেপে বিপুল দিনাতিপাত করে। এইসব দিনে সে একা, একেবারে একা।

Goyna
ছবিঃ সৌরভ হাওলাদার

রাতের আঁধারে ধুপধাপ পায়ের আওয়াজ। ইদানিং আর কেউ এ পথ না মাড়ালেও, একজন নিয়মিত আসে। কাকার মেয়ে, মন্দিরা ঘরে ঢোকে। হাতে খাবারের বাসন। ঠাঁই করে বিপুলের টেবিলের ওপর নামিয়ে রাখে, “শুধু ওই তরল খেয়ে থাকলে হবে?”
বিপুল কোন উত্তর করে না।

বছর সাতাশের মন্দিরার চেহারা আর স্বভাব দুটোই ধারালো। পরমার চলে যাওয়ার ঘটনা, পাড়ায় যেন বিপুল আর তার বৃদ্ধা মাকে অচ্ছুত করে তুলেছে। এক নোটিসে বাড়ির রান্না মাসি, কাজের মাসি বিদায় নিয়েছে। সবাই মিলে বিপুলকে কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়ে সাজা শুনিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে মন্দিরাই বোধহয় একমাত্র, যে দাদার পাশে থেকে যায়।

বিপুলদের এজমালী বাড়ি, এক উঠোনের দুদিকের অংশে বিপুলের বাবা মহীতোষ আর কাকা আশুতোষের সংসার। দুই ভাইয়ের একটি করে সন্তান, বিপুল আর মন্দিরা। বিপুলের বাবা মহীতোষ অকালে মারা যাওয়ার পর, আশুতোষই বিপুলদের দায়িত্ব নিয়েছিল। বিপুল পড়াশুনায় কৃতী, নিজের চেষ্টায় ভাল চাকরি পায়। কাকা দাঁড়িয়ে থেকে বিপুলের বিয়ে দেয়। যদিও খরচ খরচা সব বিপুলের। কিন্তু বিয়ের এই পরিণতি দেখে কাকা মনে মনে ভেঙে পড়েছে। বিশেষ করে নিজের মেয়ে মন্দিরার বিয়ের কথা ভাবতেও, তার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।

মন্দিরা যেমন দাপটে এসেছিল, তেমন করেই ফিরে যায়। বিপুল আর ওর মা কোন মতে রাত-খাবারের পর্ব শেষ করে শুতে যায়। দিন পার করার তাগিদ ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই।

কয়েক বছর হল, মন্দিরা স্কুলে ঢুকেছে। স্কুল সেরে গয়নার ধারে আসে, উল্টো দিকের একটা সরকারি আপিসে সঞ্জয়ের চাকরি। ঘড়ি মিলিয়ে আধ ঘন্টার দেখা। মন্দিরা জিজ্ঞেস করে, “বাড়িতে কিছু জানিয়েছো?”

দুজনের সম্পর্ক প্রায় সাত বছর। এখন দুজনেই প্রতিষ্ঠিত, দুজনে মিলে একসাথে একটা ফ্ল্যাটও বুক করেছে। একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নিতে, আর অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সঞ্জয় বিব্রত হয়, “তোমার দাদার ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেছে।”
মন্দিরা ভ্রূ কুঁচকে বলে, “তাতে তোমাদের কী? তুমি তো আর আমাদের বাড়িতে এসে থাকতে যাচ্ছো না?”
“তা নয়, তবে সদ্য সদ্য ঘটনা ঘটেছে। একটু থিতিয়ে যাক।”
“দেখো, আমি আমার দাদাকে চিনি। ওকে ফাঁসানো হয়েছে। তোমরা হয়তো বিশ্বাস করবে না।”
সঞ্জয় প্রসঙ্গ পাল্টাতে চায়, “সামনের শুক্রবার একটা ছুটি আছে, চল দুজনে বেড়িয়ে আসি।”
মন্দিরা কিছু বলে না। একটু পরে, ফেরার পথ ধরে। সঞ্জয়ের আরও কিছু কাজ রয়েছে, ওকে আবার আপিস যেতে হয়।

গয়না শোনে, তার ঘাটে আঘাটায় স্বপ্ন আর স্বপ্নভঙ্গের আখ্যান।

শুক্রবার বিপুলদের আপিসও ছুটি। সকাল থেকেই নেশা করেছে। টলমলে পায়ে পাড়ার ক্লাব ঘরের দিকে যায়। গয়নার ধারে বড় বটগাছের নিচে ক্লাব। সেখানে ক্যারম পিটাচ্ছে বিপুলের বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব। স্ট্রাইকার নিয়ে ঘুঁটির নিশানা মাপতে মাপতে প্রথম সন্তোষের চোখ পড়ে, বিপুল আসছে। অন্য একজনকে বলে, “মালটাকে ভেতরে নিয়ে আয়। একটু খোরাক করি।”
শান্তনু বলে, “ওর পিছনে কেন লাগছিস? যা বাঁশ, ওকে ওর বৌ দিয়ে গেছে, সেখানে আমরা আর নতুন করে কিছু নাই বা করলাম।”
চোখ নাচিয়ে সন্তোষ বলে, “বৌকে ক্যালানোর সময় মনে ছিল না?”
“ঠিক কী হয়েছে, আমরা কেউই জানিনা। ওকে ছোট থেকে দেখছি। পড়াশুনায় ভাল। চাকরি করে ভাল। সে এমন, কী করে হবে?”
“তুই চুপ কর তো। পুলিশে এমনি তুলে নিয়ে গেছিল? ডাক মালটাকে।”

হাতি গাড্ডায় পড়লে ব্যাঙ কী করে জানা নেই তবে, বিপুল এখন পাড়ার আড্ডায় খেলার পাত্র হয়ে গেছে। সন্তোষ ক্যারম ছেড়ে বিপুলের দিকে মন দেয়, “তুই বরং আরেকটা বিয়ে কর।”
বিপুল হাসে, হেসেই চলে। হাসতে হাসতে চোখে জল এসে যায়। তারপর বলে, “আমায় মা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবে।”
“কোন চাপ নেই। তোরা আমার বাড়িতে ভাড়া থাকবি।”
বিপুল যেন খুব বুঝেছে। মাথা নাড়িয়ে বলে, “তার মানে, আমি অফিসে যাবো আর তোরা আমার বৌকে নিয়ে ফুর্তি করবি?”
“তার জন্য যা লাগবে দিয়ে দেব, কোন অসুবিধা হবে না। তোর বাড়িভাড়ার টাকাও লাগবে না।”
বিপুলের কথা যোগায় না। টলতে টলতে ঘরের কোণায় পেতে রাখা সতরঞ্চির ওপর শুয়ে পড়ে।
শান্তনু বলে, “ওকে আর র‍্যাগিং করিস না। মালটার এমনিতেই করুণ অবস্থা।”
সন্তোষ হাত ঘুরিয়ে বলে, “চাকরিটা এখনও কী করে করছে কে জানে?”

Cycle with Sun
ছবিঃ সৌরভ হাওলাদার

বেলা বাড়তে ক্লাব খালি হয়ে যায়। গয়নার পাড় ঘেঁষে বটতলায় বেশ কিছু চড়াই শালিখ আপন মনে ঝগড়া করে চলেছে। সন্তোষ, শান্তনুরা বিপুলের কথা মনে রাখে না। সন্তোষ বলে, “ও শালার খোয়ারি কাটলে, নিজেই উঠে চলে যাবে। এখানে পড়ে আছে, থাক। বাইরে হলে তো নর্দমায় উল্টে থাকতো।” বিপুলকে একা ফেলে রেখে, যে যার বাড়ি স্নান খাওয়া করতে চলে যায়।

গয়নাও ফিরে দেখে না, সে চলতেই থাকে।

আগেরদিন সঞ্জয়ের সাথে ডায়মন্ড হারবার যাওয়া পরিকল্পনা হয়েছে। আজ মন্দিরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখন খবর আসে, বিপুল সকাল থেকে প্রবল নেশা করে ক্লাব ঘরে উল্টে পড়ে আছে। ব্যাগ গোছানো বন্ধ করে হন্তদন্ত ছোটে। পৌঁছে দেখে, আশেপাশে কেউ নেই। পাড়ার মোড় থেকে একটা রিক্সা ডেকে আনে। রিক্সাওয়ালার চেষ্টাতেই বিপুলকে তুলে বাড়ি নিয়ে আসে। সঞ্জয় ফোনে জিজ্ঞাসা করে. “কী হল?”
মন্দিরা বলে, “আজ আর হবে না। দাদা মদ খেয়ে চিৎপাত। ওকে নাইয়ে খাইয়ে, তবে বেরতে পারবো। অনেক দেরী হয়ে যাবে।”
সঞ্জয় বিরক্ত হয়, “দেখেছো, তোমার দাদা আমাদের বেড়াতে যেতেও দিচ্ছে না। সেখানে ঘর বাঁধতে দেবে কী করে?”
“সে আমি বুঝব! তুমি বাড়িতে বল। এভাবে হোটেলে হোটেলে আর কতদিন?”

বিপুল একটু ধাতস্থ হলে, মন্দিরা ঘরে আসে, “দাদা, তোর সাথে একটু কথা বলা যাবে?”
“নিশ্চয়ই। ভেতরে আয়।”
বিপুল খাতাপত্র বার করে কিছু লিখছিল।
“তুই ব্যস্ত আছিস।”
“আরে এই ব্যস্ততা, ভুলিয়ে রাখার ব্যস্ততা। তুই বল।”
“ঘোর কেটে গেলে, তোর মনে থাকবে? কী বললাম?”
“কী মুশ্কিল! ঘোর কাটানোর জন্যেই তো এই আয়োজন। তুই বল। আমায় ডিফারেন্সিয়াল ক্যালকুলাসের অঙ্ক দে। করে দেব। তুই বল।”
“তোরা কী কোন ব্যবস্থা নিবি? না আমি নিজেই করে নেব?”
“কী করে নিবি?”
“বিয়ে।”
“কী বললি?” বিপুল হোঁচট খায়। মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে। ভয়ার্ত চোখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
“হ্যাঁ, বিয়ে। তোরা যদি কোন উদ্যোগ না নিস। আমি আর সঞ্জয়, এই সপ্তহের মধ্যে কোন একটা কালীবাড়ি গিয়ে সিঁদূর পরে চলে আসছি।”
“সেকি!”
“হ্যাঁ, আমাদের ফাইন্যাল হয়ে গেছে। তোরা যদি মেনে না নিস, আমাদের বয়ে গেল।”
“তোর শ্বশুর বাড়ি? মানে সঞ্জয়ের বাবা মা?”
“একই কথা। মানলে ভাল, না মানলে আরও ভাল। কদিন পরেই ফ্ল্যাট হ্যান্ডওভার দিয়ে দেবে।”
“ফ্ল্যাট?”
“হ্যাঁ, বছর তিনেক আগে বুক করেছিলাম। দুজনের নামেই। ই-এম-আই এক মাস ওর, এক মাস আমার।”
“তবে তো সব হয়েই গেছে”
“তাই তো বলছি। পরে আমাকে বলতে আসিস না, আমি তোদের সামাজিক মর্যাদা রাখার সুযোগ দিলাম না।”
“বেশ! তবে কাকাকে বলে দেখি। কিন্তু আমার এই হাল দেখেও বিয়ে করতে ইচ্ছে করে?”
“করে। সাত বছর নিজেদের পরখ করলাম। আমরা নিজেদের সহ্য করতে পারছি।”

বই সংগ্রহ করতে ওপরের ছবিতে ক্লিক করুন

কাকার সাথে কথা বলে বিপুল। আশুতোষ আকাশ থেকে পড়ে, “এই অবস্থায়? কী করে সব আয়োজন করব? বিয়ের কাজ কি এত সাত তাড়াতাড়ি হয়?”
“ওদের সময় নেই।”
“আচ্ছা মুশ্কিল। আর কিছু না হোক, টাকা পয়সার জোগাড় তো করতে হবে?”
“কেন?”
“কেন মানে? বিয়ে দিতে টাকা লাগবে না?”
“তা লাগবে, আর কী কী খাতে লাগবে?”
“গহনা, লোক খাওয়ানো, তত্ত্ব, আরও কত কী!”
“কাকিমার গহনা আছে না?”
“তা কুড়িয়ে বাড়িয়ে কিছু হবে।”
“আর কতজন নিমন্ত্রিত হবে?”
“পাঁচশো, সাড়ে পাঁচশো তো হবে।”
“ঠিক আছে, আমি ছ’শোই ধরলাম।”
“এই বাজারে ছ’শো লোকের খাওয়ার ব্যবস্থা করা কী মুখের কথা? আর আমার অবস্থা তো জানিস।”
“তোমরা মেয়ের গহনা আর বিয়ের খরচটা দেখো। আমি ছ’শো লোক খাওয়ানোর দায়িত্ব নিলাম।”
“তুই?”
“কেন? আমি পারব না? এতদিন আমার বৌ ছেড়ে চলে গেছে। প্রতিদিন ও রান্না করে আমায় বাঁচিয়ে রেখেছে। ওর জন্য এটুকু পারবো না?”

গয়নার পাড়ে জলসইতে আসে এয়োস্ত্রীরা। বিয়েবাড়ি অনেক ভীড়। আত্মীয় অনাত্মীয় মিলে একশোর ওপর পাত পড়ছে দুবেলা। বাড়ি বড় হলেও একশো মানুষকে ধরানো সম্ভব নয়। নিমন্ত্রিতরা প্রতিবেশীদের বাড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। মফস্বলে এটাই রেওয়াজ। পুরো পাড়া যেন এক পরিবার। নেই কোন পাঁচিলের সীমানা, মনেরও।

বাড়ির উঠোন দিয়ে বয়ে চলে গয়না। সময় অসময়ে ডুব দিয়ে আসে। নিজস্ব নদী বয়ে চলে তার স্বচ্ছ অবয়ব নিয়ে। নিচ অবধি দেখা যায়। মনেরও যেন তল পাওয়া যায়।

সঞ্জয়দের বাড়ির একজন মুরুব্বী আলাদা করে আশুতোষকে বলেছিল, “শুভ কাজ, বুঝতেই পারছেন, বিপুল যেন অনুষ্ঠানের সময় না থাকে।” বিপুল ছিল না। কিন্তু ওকে নিয়ে কানাকানি চলেছে ভরপুর।

গয়না শব্দগুলোকে বয়ে নিয়ে যায়।

কন্যা বিদায়ের সময় উৎসবের তাল কেটে যায়। সূর্যের তেজও যেন কমে আসে। এলোমেলো ছড়িয়ে থাকে শালপাতা, কাগজের কাপ। প্যান্ডেলওয়ালা বাঁশ খুলতে চলে এসেছে। দূর দূর থেকে যারা এসেছিল, তারা যে যার ব্যাগ গোছাতে ব্যস্ত। অতিথিদের মধ্যে কয়েকজন বিদেশীও ছিল। তাদের চোখে মুখে বিস্ময়, এত লম্বা অনুষ্ঠান! আর এত রকম সম্পর্কের লতাপাতা! উন্নত দেশে এমন উষ্ণতা কই? আজ সন্ধে নামে মন্থরগতিতে। গতরাতের রোশনাই আর নেই, আকাশ ঢেলে সাজে তারায়। মাথার ওপর মাঘ মাসের কালপুরুষ ঝুলে থাকে। তার খোলা তলোয়ার যেন সম্পর্কের রক্ষক রূপে আশ্বাস দেয়। আগামী প্রজন্ম আসুক, দুধে ভাতে থাকুক সন্তান। রাত বেশি হলে হিম পড়ে। গাছের পাতা বেয়ে সেই হিম টপটপ করে ঝরে। বাপ মায়ের গোপন কান্নার মতো সে বৃষ্টি।

গয়নার বুকে শব্দ হয়, কুলকুল কুলকুল।

নিজের ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের কবরে দাঁড়িয়ে, বিপুল বোনের নতুন জীবনে প্রবেশ মুহূর্তে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে। গয়নার পাড়ে এক কোণায়, অন্যদের থেকে আড়ালে চুপ করে বসে ছিল।
মন্দিরা ঠিক খুঁজে বার করে। বিদায় নিতে এসে দাদাকে জড়িয়ে ধরে মন্দিরা বলে, “এখানে একা একা? কী ভাবছিস দাদা?”
চোখের জল লুকিয়ে, একটু হেসে বিপুল বলে, “ভাবছি, কাল থেকে আমায় কে রেঁধে দেবে?”

গয়নার ছলাৎ আওয়াজে বাকী সব ঢাকা পড়তে থাকে।

[বিগত সংখ্যাতে এই লেখকের গল্প]

[পরম্পরা ওয়েবজিন, মার্চ ২৪, সূচিপত্র]

0 0 ভোট
Article Rating
30 Comments
Oldest
Newest Most Voted
পংক্তির ভেতর মন্তব্য
সব মন্তব্য
আইভি চট্টোপাধ্যায়
আইভি চট্টোপাধ্যায়
7 months ago

বাহ্ । খুব সুন্দর গল্প ।

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago

অনেক ধন্যবাদ

Alo Ghosh
Alo Ghosh
7 months ago

বিচ্ছেদের মতে স্বাভাবিক একটা ঘটনা আমাদের গ্রাম বাংলায় আজও কত গভীর সমস্যা তৈরী করতে পারে মানুষের জীবনে সেটা খুব সুন্দর করে ফুটে উঠেছে গল্পটায় । সন্জয় আর মন্দিরের চরিত্র গুলো যেন মনে হয় আমাদের কতো পরিচিত । গল্পটার রেশ রয়ে গেল ।

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago
Reply to  Alo Ghosh

অনেক ধন্যবাদ বন্ধু

বিধান দত্ত
বিধান দত্ত
7 months ago

… ক্রমশঃ ? …. গল্পটা শেষ হয়নি কিন্তু …

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago

রেশ রেখে গেছে জেনে ভাল লাগল। হয়তো আবার এই চরিত্রটিকে দেখতে পাব, কেমন আছে? তখন নিশ্চয়ই জানাবো।

মিতাস
মিতাস
7 months ago

. ছোট্টো গল্প কিন্তু মায়াময় উষ্ণতায় ভরা

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago

অনেক ধন্যবাদ

মিতাস
মিতাস
7 months ago

. ছোট্টো গল্প কিন্তু মায়াময় উষ্ণতায় ভরা

দ্বৈপায়ন গোস্বামী
দ্বৈপায়ন গোস্বামী
7 months ago

খুব‌ই ভালো লাগলো, বিশেষ নদীর নামটি, গয়না।

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago

তুমি পড়েছ জেনেই সুখ

অমিত
অমিত
7 months ago

তারপর কি হল? শেষ নেই। নদীর নামটি খুব ভাল লাগল।

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago
Reply to  অমিত

আপনি পড়ছেন জেনেই সুখ। পরের শুরুর সলতে পাকানো রইল। হয়তো জীবনের মতো আবার আলো জ্বলে উঠবে।

MAHUYA ADHIKARI
MAHUYA ADHIKARI
7 months ago

As usual….khub valo laglo…ekhon Bhai bon er somporko protiniyoti venge choleche ….se khane dariye ekta valo BONDING n DEPENDENCY represent korecho …###SOURAV DA , tumi r tomar golpo ONOBODYO♥️

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago

তুমি পড়ছো জেনেই সুখ।

Debjani Mallick
Debjani Mallick
7 months ago

খুব ভাল লাগল.. গয়না …
সঙ্গের ছবিগুলো অপূর্ব ।

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago

তুমি পড়েছ জেনেই সুখ

দেবাশিস দত্ত
দেবাশিস দত্ত
7 months ago

ছোট্টো গল্প কিন্তু, বড্ড মায়া ময়, নদীর নামটা ও খুব মায়াবী

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago

এমনই আমাদের নদীর অস্তিত্ব। ধন্যবাদ

Arindam Bhattacharya
Arindam Bhattacharya
7 months ago

……. কুলকুল শব্দে গয়না বয়ে চলে অনন্তের সন্ধানে……. বেশ ভালো…..

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago

অনেক ধন্যবাদ
এতটুকু জল ছুঁয়ে জীবন কেটে যায়।

Ranjana Dhar.
Ranjana Dhar.
7 months ago

খুব ভালো লাগলো। ছোট্ট কিন্তু বৃহত্তর একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন।

Sourav Howlader
Sourav Howlader
7 months ago
Reply to  Ranjana Dhar.

অনেক ধন্যবাদ

চন্দন সেনগুপ্ত
চন্দন সেনগুপ্ত
6 months ago

বড় মায়াময় গল্প।বহমান জীবনের কিছু খন্ড মুহূর্ত নিয়ে একটি লুপ্তপ্রায় সম্পর্কের দায়বদ্ধতা আর নির্ভরতার নিপুণ হাতে আঁকা ছবি।অপূর্ব শব্দচয়নে মেদহীন বর্ণনা।লেখনীর অনুসন্ধান ক্রমশ গভীরতার দিকে এগিয়ে চলছে। অনির্বচনীয়ের অনুভূতি হল।

Sourav Howlader
Sourav Howlader
6 months ago

অনেক ধন্যবাদ

জীতা লাহিড়ী
জীতা লাহিড়ী
6 months ago

মানুষের জীবন আর নদীর বয়ে চলা খুব ভালো লাগলো দাদা,কোন দিন কি এরকম লিখতে পারবো।

Sourav Howlader
Sourav Howlader
6 months ago

অনেক ধন্যবাদ

অংশুমান ঘোষ
অংশুমান ঘোষ
6 months ago

ভালো লাগলো।

Sourav Howlader
Sourav Howlader
6 months ago

অনেক ধন্যবাদ

PINAKI TEWARI
PINAKI TEWARI
6 months ago

গয়না মিশ্রতোয়া হয়ে বয়ে চলুক ।