স্বপন মজুমদার

বুকের ভেতর থেকে

আমার সংগে তুমি হেঁটে যাবে কত দূর বলো!
তোমার তো ফেরা আছে
নির্দিষ্ট সময়ের পর তুমি সেই শৃঙ্খলিত
চলে যাবে নগ্ন অন্ধকারে-
তবুও তোমার দেখা পাহাড়ি অচেনা ফুল যেন
যার গন্ধে অনায়াসে ভেসে যাওয়া যায়
সুন্দরী উচ্ছল ঝর্ণার মতো বাধাহীন।
আধুনিক গবেষণাগারে তবুও বিরামহীন
পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বিশ্লেষণের পর বিশ্লেষণ;
উৎসব উৎসব বলে সহাস্য চির অসহায়
মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতির সহশ্র ফানুস ওড়ানো;
সমুদ্র সৈকত থেকে পাহাড়িয়া পথ
নিরাপত্তা বাহিনীর লাগাতার বুটের শব্দে
সাময়িক শুয়ে বসে থাকবে ধ্বস্ত তুমি
তীব্র বিবমিষায় কতো যে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা
দূষণ মাত্রাছাড়া নিবিড় প্রশ্রয়ে,তুমি জানো
বিষাদঝড়ের পাশে বুনোট মাদুর পাতবে গল্পদাদু-
ঘুমের মধ্যে আর একবার সংক্রমিত হবার আগে
নতজানু প্রার্থনা, তুমি দু’দন্ড
দাঁড়াও মুখোমুখি
বুকের ভেতর থেকে আনো ভোরবেলা, শিউলি সুঘ্রাণ
কথকতাময় হোক আ-বিশ্বের হাভাতে মানুষ ‌

গভীর অসুখ অতঃপর

তুমি তো জানো না আমি দূরে কোন উপত্যকায়
বসে আছি মনে হয় নিরুপায় হাজার বছর
এখন এখানে শুধু বাতাসের তীব্র হাহাকার
ঘুম নেই,যন্রনাকাতর দুই চোখে তবুও
তোমার বৃষ্টি ভেজা কমনীয় মুখ
ঘনিষ্ঠতা বর্ণময় উঠে বসে নতজানু সুখ
শীতের লেপের নিচে লুকোই সোহাগ
সময় তো এভাবেই কাছে আসে,যায়
মহিমায় অন্তর্লীন রাত জাগা বাদুড়ের মতো

সৌখিন আনন্দ নয়,চেয়ে দ্যাখো একান্ত গভীরে
সমুদ্রের উদারতা অন্তর্লিন সুখের সংসার
মুক্তোর মতো শিশিরে শিশিরে ছয়লাপ ,
আত্মানুসন্ধানে আশৈশব ফিরে ফিরে আসা
বসে থাকা দু হাত বাড়িয়ে মনে হয় ছায়াপথে
আহত পাখির মতো একা, শুধু একা —
তবে কী তুমিও এভাবেই চলে যাবে দূর পরবাসে
ভেঙে চুরে হৃদয়ের চর! বৃষ্টির পতন শব্দ
থেমে গেলে গাঢ় হয় গভীর অসুখ অতঃপর
নিরাময়ে তোমাকেই চাই।

[পরম্পরা ওয়েবজিন, ডিসেম্বর ২৩, সূচিপত্র]