প্রবণ পালন চট্টোপাধ্যায়

জন্মদিনের চাওয়া

এখন আমার প্রদীপ ঘষতে বড্ড ভয়
হঠাৎ যদি দৈত্য আসে-
ঝাঁকড়া চুল, বিশাল দাঁত, আগুন চোখে প্রশ্ন করে, আজকে তুমি কী চাও?

কী যে আমি চাই, আমিই কি জানি তার কিছু!

যদি বলি, নদী হতে ইচ্ছে করে, তা হবে না-
পরতে পরতে কথামালা নিয়ে নিশ্চুপ পলিমাটি,
তোমার হবে না স্নান।

যদি বলি, পাখি করে দাও, সেও ত হবে না-
কেননা এই সাহারায় বড় আকাল সবুজ সামিয়ানার,
দাবানল লকলক-

যদি বলি, প্রেমিক হতে চাই
দৈত্য হাসবে, বিকর্ষণে ভাঙবে সব চাওয়া
এখন গোধুলী, সকলেই আড়চোখে তির্যক।

কী যে বর চাই, আমিই কি বুঝি তার কিছু!

আমার খুব ইচ্ছে এখন, সাদা কাগজ হতে চাই,
সেখানে কবিতা হবে যেমন খুশি,
রঙ পেনসিলে এলোমেলো আঁচড়,
আটপৌরে নদী আসবে, যেমন খুশি সাগর-
আমাদের অলিখিত কল্পনার কুটীর থাকবে
ঝর্ণা ছুঁয়ে-
মেঘ পেরিয়ে আমার জন্য ইথার স্তর, ওজন স্তর
অদৃশ্য মখমলে তোমার তরঙ্গ মাখা…
একথা জানবো শুধু তুমি আর আমি।

জানিনা দৈত্যমশায় রাজী হবেন কি না!

শিল্পীঃ ভূদেব মজুমদার

শেষ নিঃশ্বাস ঠিকানা

আমি ত রাত্রিদিন ভিজে ভিজে থাকি
তোমার আতরে
তোমার ভ্রু পল্লবে দিশাহীন আমি
এখনো বোঝোনি বুঝি সরোবর কথা
সেখানেও অলক্ষ্যে উজান শিহরণ
যেমনটি গোধূলি নামে, স্বপ্নের পাহাড়পুরে
ছুঁয়ে কি গেছে গো তোমায় !

যেদিন আমি শঙ্খচিলের স্বপ্ন ডানায় বসে
মেঘ পেরিয়ে উড়তে পারবো
সেদিন আমি বুঝতে পারবো
শেষ নিঃশ্বাস কোথায় গিয়ে মেশে…

ওরা কি শুধু তারার দেশে যায়!
না কি সবাই শুরুর জন্য চরম অপেক্ষায়!
যদি তখন বিড়ম্বনায় উত্তর না পাই
একটি একটি পালক ছিঁড়বো-
আমার যা হয় হোক।
শুধু জানতে চাইবো, বুঝতে চাইবো
মাটির বুকে নিভিয়ে আলো
এখানে কেন, বিদ্যুৎ চমকায়?

[পরম্পরা ওয়েবজিন, ডিসেম্বর ২৩, সূচিপত্র]