ফিরে এসো খরস্রোতা ।
তোমার বুকের ওপরে
নির্জনে বয়ে যায় ক্লান্ত জীবন ।
ঘন ডালপালায় ঢাকা বনের রোদটুকু
ধীরে ধীরে গেল যে মিলিয়ে !
খসে পড়া কোন’ ব্যর্থ মুকুল দেখো
আলোবৃষ্টিজলে মুখরিত হতে চায় ।
গাছের শরীরে আজ তাপজ্বর খুব ।
তবু সে তোমায় পরাগস্বপ্ন দিতে পারে ,
দিতে পারে দু বাহু উন্মাদ ।
জ্যোৎস্নায় ভেসে যায় ধলভূম ।
তোমাকে শোয়াবো সুবর্ণরেখার ধারে,
শুষে নেব জলস্রোত অতল গভীরে ।
সেই কবে ফাল্গুন রাতে
পলাশের এক বিন্দু সুখ এনেছিল সুবাতাস !
অতল মন্দ সুরে ভরে দেবে বলে ।
ধূ ধূ বালি তোমার শিয়র,
বিগত সে জীবনের আলো
ফোঁটা ফোঁটা তাপ দেয় কোষে ।
তুমি কি পাহাড় ভালোবেসে
সহস্রধারায় মন সাজালে গোপনে ?
তাহলে চোখের নীচে কেন এত বালি ?
গিরিখাতে বাঁধা কেন শূন্য নৌকাগুলি !
শয্যা পেতেছে চাঁদ তোমার শরীরে,
বোবা মন পিষে যায় বাঁকে বাঁকে ধসে ।
ফিরে এসো খরস্রোতা
মাটির আর্দ্রতা আমি বিছিয়েছি বুকে ।
ধুলোবালি নিস্তরঙ্গ ঢেউ
ফেলে এসো আচ্ছন্ন প্রান্তরে ।
নুড়ি পাথরের স্তোত্র আজও তো
ছেয়ে আছে অবরোহী মনোভূমি জুড়ে ।

ছবিঃ ডা. গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

বসন্তদিন তুই
হবি,বিশু পাগল সেই ?
তোর শিমুল ঝরা ভোরে
আমার নতুন পলাশ মন ।

যদি মুকুলগুলো নিই
আর হিম সরিয়ে দিই
বুকে কোকিল উদাস সুর
পুষে তোকেই প্রয়োজন ।

হারাই হলুদ সুখে যেই
বুঝি দাগ মুছেছে কই !
তবু ঋতুর নেশায় মেতে
নেবো ওষ্ঠেতে চুম্বন ।

তোকে এমন করে ছুঁই
যেন দুচোখ জুড়ে র’ই
সোহাগ নিভৃত বাস পায়
হয় বিনিদ্র বন্ধন ।

পাপড়ি ছেঁড়া ফুলের ছাই
এখন অনেক উপেক্ষাই
শুধু হাওয়ার গন্ধে ভাসে
দীর্ঘ মাতাল মনকেমন ।

লিখি সেই কবিতার বই
তেমন কলম কালি নেই
যাই পাতার ভাঁজে রেখে
তোর ফাগুন আমন্ত্রণ ।

[পরম্পরা ওয়েবজিন, এপ্রিল ২৪, সূচিপত্র]