চক্রহীন স্রোত
এবারে হবে না আর যাওয়া
পথপাশে পড়ে আছে রোদ
আলো যেন পিছু ধাওয়া করে
ছুটি, বিপরীতে দিকভ্রান্ত
লাফ দিয়ে কাঁটা ঝোঁপ পেরিয়ে গেলেও আরও রোদ
পাহাড়ের মতো, ঝুলে আছে মাথার ওপরে আজীবন
সামনে অসীম আকাশ
উড়তে তো পারি না
পড়ে যাই
দীর্ঘ এক সামুদ্রিক কুয়ো
ঝাঁপ দিয়ে জীবনের বালি লেপ্টে গায়ে-পায়ে
নুনের বিষণ্ণ স্বাদ পার হলে কি শূণ্যের
চক্রহীন স্রোত খুঁজে পাব বুকের ভেতরে
মধুমতী নদী
আগুন রঙের মেঘে দোলে সন্ধ্যার বিস্তীর্ণ মাঠ
জ্বলে ঘাস, ভয়ে ছোটে বুনোদল, পোড়ে জন্মান্তর
আসবাব-কাঁঠাল গাছ — তুলোর জঙ্গলে বাঁধা ঘর
ফনফনে জীবন্ত ফার্ন পুড়ে কালো
ধোঁয়া ক্রমে ছায়া হয়ে ঘিরে ধরে খাদ
বটের কোটরে মৃত ছানা আগলে আকুল মা-পাখি,
ভাবে, যদি দেয় সাড়া
জঙ্গল-প্রকৃতি ভেদ করে ওঠে মায়াচাঁদ
মৃত্যুর মেঘের পাশে মুঠি তোলে রাগী একদল মানুষ
ভিড়ের মধ্যে আমার দাদা-ভাই-বোন পরস্পর হাত আঁকড়ে অন্ধকারে
ওরা ক্রমাগত ইঁট ছোড়ে যে-যত দূরত্বে, আগুন কতটা দূরে যেতে পারে
এর মধ্যে এক মেয়ে পিঠে বই, চুল খোলা, বিপর্যস্ত পোড়া দহে
শুধু চোখ জোড়া ঘাসের সবুজ
স্কুলের ঘন্টার পর পালাতে পালাতে নয়
বিষণ্ণ বাধার স্তূপ ঠেলে বেগবান পৌঁছে যেতে চায় অন্য গ্রহে
তার কেন্দ্রে জ্বলে আগুন আকাশ
পা-দুটি, হাতের তালু রাগী মেঘে লাল
আর জিভ বেরিয়ে লকলক করে, চেটে খায় গোটা মৃত্যু-ঢিবি
জানি, কাল ভোরে সেই লাভা-জিভ মধুমতী নদী হয়ে ভাসাবে পৃথিবী…
ইন্দ্রানী দি, দারুণ। ।এতো সুন্দর লেখো, আহা–
সৌম্য দত্ত
চক্রহীন স্রোত, ও মধুমতী নদী দুটি কবিতাই
বেশ উচ্চমানের! কবি কে জানাই অভিনন্দন।