ইলা সূত্রধর
বায়োস্কোপের বাক্স
আজ এই নির্জন রাতে
দাওয়ায় উপর আকাশ বিছিয়েছি
তাই বুকের ভিতরে অতি সন্তর্পণে
স্মৃতির বাক্সগুলো খুলে খুলে দেখি –
এখনও দৃশ্যগুলো
একেক করে অবিরাম ভেসে চলে
ছোটবেলায় যেমন শুনেছি
মক্কা-মদিনার গল্পের বাক্সের কথা
ঠিক তেমনি ডুগডুগি বাজিয়ে আসত
ভ্রাম্যমান বায়োস্কোপের ফেরিওয়ালা
বাক্সের গায়ে সার সার কত মুখছবি
আমরা দৌড়ে গিয়ে ঢাকনা খুলে দেখতাম
স্বপ্ন জুড়ে গল্প বলতেন জাদুকর
আমাদের মনে বয়ে যেত খুশির হিল্লোল
এখনও প্রতিনিয়ত জীবনের রিল ঘুরে যায়
কত ছবি সময়ের স্রোতে আবছা হয়ে গেছে
হেমন্তের শুকনো পাতার মতো
এই মধ্যযামে সেই ঝরা পাতার গল্প লিখছি
নারীকে দেখে বিশ্ব শেখে
নবজাতক এই সমাজে ভূমিষ্ঠ হলে –
উৎকণ্ঠা, সবার প্রশ্ন – কন্যা নাকি ?
বাড়ির লোকও পড়ল যেন অগাধ জলে !
সেই জন্য যুগান্তরের গল্প আঁকি।
মা’র মমতায় কোলের শিশু হৃদয়জাত।
টলমল পায় শিখছে হাঁটা ছোট্ট খুকু,
ঘরকন্না খেলনাবাটি থাকল বরাত !
নিজের মতন তৈরী করে জীবনটুকু।
ভাইফোঁটা আর রাখীবন্ধনে স্নেহের প্রীতি,
মানবিক এই ভালোবাসার নিয়েছে দায়;
শৈশব আর কৈশোর যখন টানছে ইতি –
যুবতী প্রেম আকর্ষণে পূর্ণতা পায়।
এই প্রকৃতির ভারসাম্য পুরুষ নারী,
পারস্পরিক পরিপূরক জীবনসাথী;
ধারাবাহিক সৃষ্টির বীজ বপোনকারী –
মাতৃসুখেই জ্বলালে তুমি আলোর বাতি !
তুমি জায়া, জগত জননী, মানবী কন্যা ;
অনন্তকাল সংসার বেঁধে শান্তি রাখো !
লালিত করেছো ব্যাপ্তিকে চির অনন্যা;
অবিরাম পথ ত্যাগের সাথে সচল থাকো।
অশুভ শক্তি বিনাশ কালে সেজেছো দেবী !
মাতৃরূপে রক্ষা করেছো বিপদ থেকে,
প্রতীকী রূপক সবার ওপরে তুমি সেবী।
যুগে যুগে তাই নারীকে দেখে বিশ্ব শেখে !!