রবীন্দ্রনাথ এবং পুরস্কার
রবীন্দ্রনাথ ও যীশু খ্রীষ্ট – পাশ্চাত্যের খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বী মানুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেহারায় বিশেষ করে তাঁর শ্মশ্রু – গুম্ফ মণ্ডিত মুখের মধ্যে খ্রীস্টের আদল খুঁজে পেত। রবীন্দ্রনাথ যে পাশ্চাত্যের মানুষের কাছে এতো প্রিয় ছিলেন তার অন্যতম কারণ সম্ভবত এই সাদৃশ্য।এই প্রসঙ্গে আমাদের মনে পড়তে পারে ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় খ্রীস্টের শেষ উচ্চারণ – “Father, forgive them, for they know not what they’re doing.” তাঁর হন্তারকদের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করছেন যীশু। রবীন্দ্রনাথও প্রার্থনা করলেন।১৬২ তম জন্মদিনে সকাল থেকে ভক্তদের উৎপাতে ক্লান্ত রবীন্দ্রনাথ মধ্যাহ্নভোজনের পরে নিদ্রাভিভূত হয়েছেন। হঠাৎ অনেক মানুষের সম্মিলিত কণ্ঠধ্বনিতে তাঁর নিদ্রার রেশ কেটে গেল। তন্দ্রাজড়িত অবস্থায় তিনি যেন শুনতে পেলেন বাংলা আকাদেমি নামক সংস্থা নবপ্রবর্তিত একটি বিশেষ সম্মান এখনকার পঃ বাংলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্তৃকে অর্পণ করছে, এই গোলমাল সেই অনুষ্ঠানকে ঘিরে।
সংস্থার মাথায় যিনি তিনি নিজেকেই পুরস্কৃত করছেন এমন অনাচার দেখে অনেক মানুষ নিন্দামন্দ করতে লাগলো। এই ব্যক্তিসাহিত্যে নিরলস অবদানের জন্য পুরস্কৃত হওয়ার যোগ্য কিনা সে প্রশ্নও উত্থাপিত হচ্ছে। অধুনা অভাগা এই বাংলায় কে নিজেই নিজেকে পুরস্কার দিচ্ছে তা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের মাথাব্যথা নেই তাই তিনি ঘুমের ঘোরের মধ্যেই ছিলেন। কিন্তু অনুষ্ঠানের মধ্যে এক গোঁফ-দাড়িওলা সাদা কাক হঠাৎ বলে উঠলো – রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে নিজে এসে এই সম্মান নেত্রীর হাতে অর্পণ করতেন। ঠাকুর এতক্ষণ নির্লিপ্তই ছিলেন। তাঁর নামটা উচ্চারিত হতেই ঘুমের ঘোর কেটে গেল। তিনি ব্রাহ্ম তাই দেবতার মূর্তিতে অবিশ্বাসী। বিমূর্ত ঈশ্বরের কাছে তিনি প্রার্থনা করলেন যীশুর মতোই – এই পাপিষ্ঠ দুরাচারীদের তুমি ক্ষমা কোরো, এরা জানেনা কতবড় পাপ এরা করলো।
এই প্রার্থনা জানাতেও আমাদের সাহস নেই প্রভু।
মাপ করবেন!
সাহসী লেখা।