বেড়িয়ে পড়েছে শয়তান
নরকের থেকে বেড়িয়ে পড়েছে শয়তান ,
কেউ নেই আর অযথা করবে গুলজার ;
বিলকুল খালি সুনসান এক ময়দান !
চিরুনির মতো তল্লাশি করে সোলজার।
গ্রাম ও শহরে পথে-প্রান্তরে চলে খোঁজ,
সংযমী ছুতো, লুকিয়ে রেখেছে প্রলোভন ;
স্বার্থের দানা অঙ্কুর বাঁধে রোজ রোজ।
শয়তান জাগে আমাদের মাঝে অশোভন!
মহাজনি প্রভু বিছিয়ে রেখেছে কারবার,
ঈশ্বর এখন বনে যায় সেও দানবে।
স্বর্গ হেরেছে নরকের কাছে বারবার!
স্বচ্ছ জীবন আর কি ফিরবে মানবের ?
আমার বাবা
আমার বাবা ছিলেন –
একজন আপাদমস্তক কারখানার শ্রমিক।
সাধারণ ছাপোষা মানুষের ভিতর
আরো একটা মানুষ হয়ে উঠতেন,
তাই কোন প্রলোভন ও প্রাচুর্য্য –
তাকে গ্রাস করতে পারেনি।
বাবা কোনদিন স্কুলে যাননি,
আর পাঁচটা শিশুর মতো
খেলাধুলার বিলাসিতা ছিলনা কখনো।
রাষ্ট্র যখন শৈশবের শ্রম প্রথার বিরুদ্ধে,
শ্রমই ছিল তাঁর বড় প্রয়োজন;
তাই তিনি শিশু শ্রমিক।
মুটে থেকে ফাই-ফরমাস খাটা
অসহায় হয়ে ঘুরেছে সর্বত্র।
ফরিৎপুর থেকে ভ্যাদেরগঞ্জ,
গোপালগঞ্জ স্টীমারঘাট থেকে বার্মা,
কলকাতা থেকে শিলং,
নাহারকাটিয়া থেকে মার্গারিটা,
গ্রাম থেকে মফস্বল,
বন্দর থেকে নগর,
পাহাড় থেকে সীমান্তে,
একমাত্র জীবন সংগ্রামের জন্যই –
মূল্যবোধের নতুন সংজ্ঞা খুঁজতে চেয়েছিলেন !
জ্ঞানত পিতাকে দেখেননি কখনো !
দেখেছেন –
প্রতি মুহূর্তের অভাব-অনটন,
ধর্ম নিয়ে রাজনীতির বিভাজন;
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা আর রায়োট।
তাই টুকরো টুকরো হয়েছে স্বদেশ
তাঁরকাটার সীমানা পড়েছে –
ক্রমশ বুকের উপর !
এসব তার দেখা।
বাবা গির্জায় না গিয়ে –
জেসাসকে খুঁজে ফিরতেন বস্তিতে।
বন্ধু মনসুরকে বাঁচাতে –
মহম্মদের ঘোড়ায় লাগাম দিয়ে
পীড়ের দরগায় গিয়ে সিন্নি চরাতেন।
অভুক্ত অনাথ শিশুদের পাশে
ঈশ্বরকে এনে হাজির করতেন।
জানিনা !
কিসের মোক্ষলাভের জন্য –
তিনি এসব করতেন ?
নিন্দুকের কাছে উনি ছিলেন –
একজন বিধর্মী।
কেউ বলতেন – নাস্তিক !
আমি কেবল দেখেছি –
ভোরের সূর্যের দিকে
হেঁটে যাচ্ছেন আমার বাবা !!
বিনীত নিবেদন –
‘বেড়িয়ে’ শব্দটা ভুল। ‘বাহির হওয়া’ মূল শব্দ। ‘বেরিয়ে’ হবে বলে আমার মনে হয়।
আমি ভুল বললে ক্ষমা করে দেবেন।
বেরিয়ে পড়েছে শয়তান – অসাধারণ কবিতা। কবিকে কুর্নিশ।
“আমার বাবা” কবিতাটি পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।