পর্ব – ৩

রস আইল্যান্ডে গিয়েও এক বিপত্তি। সেখানে রাখাল বাবু ব্রিটিশ আমলের তৈরী পাওয়ার হাউস, বেকারি, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ইত্যাদি দেখতে ব্যস্ত, কিন্তু তার একাগ্র দর্শনে বাধা দিতে লাগলেন একদল পরনে হাফ প্যান্ট এবং চোখে সানগ্লাস পরিহিত মানুষ।

কি আশ্চর্য তিনি হঠাৎ দেখলেন আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই হাফ প্যান্ট এবং কানে মোবাইল ফোন। ওখানে লিপিবদ্ধ ইতিহাসের দিকে কারো নজর নেই। রস আইল্যান্ডকে এক সময় প্যারিস অফ দি ইস্ট বলা হত। ব্রিটিশরা এখানে অনেক কিছু বানিয়েছিলেন। মিউজিক ব্যান্ড বাজতো।।পরে ১৯৪২ সাল নাগাদ জাপানীরা এসে ব্রিটিশদের হটিয়ে দেয়। এতে আইল্যান্ডের অধিবাসিরা পুলকিত হয়ে জাপানীদের বরন করে নেয়। কিন্তু কিছুদিন পরেই তারা দেখে যে জাপানীরা সেখানে বাঙ্কার তৈরী করছে।

খাটাচ্ছে ওখানকার অধিবাসীদের এবং কয়েদীদের। এবং এই জাপানীরাও অত্যাচারে ব্রিটিশদের থেকে কম যেত না।
কিন্তু তার এই দেখায় বাধা পড়লো কিছু উচ্চকিত কন্ঠস্বর।
–নেহী, ম্যায় তো আভি রস মে হুঁ।
–আমিতো আসছে রোববার ফিরছি দাদা।
–আ যাও ইসি ওয়ক্ত। হামারা বোট অভি ছোড়নে বালা হ্যায়।
এই ধরনের মোবাইল পরিবাহিত কথাবার্তা রস আইল্যান্ডের মাটি গাছপালায় আছড়ে পড়তে লাগলো। এসবে বিভ্রান্ত হয়ে রাখাল বাবু নিজেই গুটি গুটি সেঁধিয়ে গেলেন বোটের ভিতর।


এরপর নর্থ বে আইল্যান্ড। ওরে বাবা এখানে তো মেলা বসে গেছে। রাখাল বাবুর মেয়ে ও নাতি স্কুবা ডাইভিং করতে চলে গেল। আর রাখাল বাবু গিন্নী সহ সাবমেরিনে চেপে সমুদ্রের নীচে কোরাল এবং রঙীন মাছ দেখতে লাগলেন।

রাখাল বাবুর মন আনন্দে ভরে উঠলো। বয়স জনিত কারনে তিনি স্কুবা করতে পারলেন না, তার জন্য কোন দুঃখ রইল না

[রাখালবাবুর ভ্রমণ বৃত্তান্ত (পর্ব – ২)]

[পরম্পরা ওয়েবজিন, এপ্রিল ২৪, সূচিপত্র]